ঢাকা, ১১ জানুয়ারি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। গতকাল শপথ নিয়েছেন নতুন সংসদ সদস্যরা। আজ প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার ৩৬ সদস্য শপথ নেন। সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শপথ অনুষ্ঠানের পর নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগের মন্ত্রিসভার অনেকে নতুন মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেয়েছেন। এমনকি তাদের কারও কারও পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ও পরিবর্তন হয়নি।
নতুন সরকারে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ২৫ জন। তাদের মধ্যে আ. ক. ম মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন শিল্প মন্ত্রণালয়, আসাদুজ্জামান খান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডা. দীপু মনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মো. তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, মুহাম্মদ ফারুক খান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, আবুল হাসান মাহমুদ আলী অর্থ মন্ত্রণালয়, আনিসুল হক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আবদুস শহীদ কৃষি মন্ত্রণালয়, সাধন চন্দ্র মজুমদার খাদ্য মন্ত্রণালয়, র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, আব্দুর রহমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ভূমি মন্ত্রণালয়, আবদুস সালাম পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ফরহাদ হোসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ফরিদুল হক খান ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জিল্লুল হাকিম রেলপথ মন্ত্রণালয়, সাবের হোসেন চৌধুরী পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, জাহাঙ্গীর কবির নানক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, নাজমুল হাসান পাপন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ইয়াফেস ওসমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং ড. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জুনাইদ আহমেদ পলক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, জাহিদ ফারুক পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, সিমিন হোসেন রিমি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুহিববুর রহমান দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মো. আলী আরাফাত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বেগম রুমানা আলী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে।
নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গোলযোগের কারণে একটি আসনের ফল স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকি ২৯৮টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২২২ আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। বাকি ৬৫ আসনের মধ্যে ৬২টিতে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি করে আসন।
স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হওয়া ৬২ জনের মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগের নেতা। জাতীয় পার্টি যে ১১টি আসনে জয়লাভ করেছে সেগুলোতে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এছাড়া জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে আর কল্যাণ পার্টি যে আসনে জিতেছে সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan